আসিফা বানোর নির্মম পরিণতি: হিন্দুত্ববাদের ছত্রছায়ায় ধর্ষণ ও হত্যার বিভীষিকা
- Tanvir Hossain
- Aug 16, 2024
- 2 min read

ভারতের জম্মু ও কাশ্মীরের কাঠুয়া জেলার একটি ছোট্ট গ্রাম, যেখানে ৮ বছর বয়সী আসিফা বানুকে মন্দিরে আটকে রেখে আটদিন ধরে সঙ্গবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হতে হয়। এই নির্মম অত্যাচার তার যৌনাঙ্গ ছিন্নবিচ্ছিন্ন করে দেয়, শেষমেষ তাকে গলা টিপে এবং মাথা থেতলে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে মন্দিরের পাণ্ডা সঞ্জিরাম স্বীকার করে, প্রতিদিন মন্দিরের কাজের সময় আসিফাকে ঘুমের ঔষুধ খাইয়ে স্টোররুমে ফেলে রাখা হতো। কাজ শেষ হওয়ার পর, মন্দিরের কাজকর্ম শেষ হলে সঞ্জিরাম ও তার সহযোগীরা অচেতন অবস্থায় আসিফাকে ধর্ষণ করতো।
এই নৃশংস ঘটনার খবর প্রকাশিত হওয়ার পর, ভারতের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বিচার চেয়ে আওয়াজ উঠতে থাকে। কিন্তু, এই বিচার চাওয়ার পথে বাধা হয়ে দাঁড়ায় হিন্দুত্ববাদীরা। তারা ধর্ষকদের রক্ষার জন্য র্যালি বের করে, যার নেতৃত্বে ছিলেন বিজেপির দুই নেতা চন্দ্র প্রকাশ গঙ্গা ও চৌধুরী লাল সিং।
অন্যদিকে, আসিফাকে গণধর্ষণ ও হত্যার খবর যখন মিডিয়ায় ব্যাপক প্রচার পায়, তখন ভারতীয় পর্নসাইটগুলোতে আসিফার নাম শীর্ষে ট্রেন্ড করতে থাকে। লাখ লাখ মানুষ তখন পর্নসাইটে আসিফার ধর্ষণের ভিডিও খুঁজতে থাকে, যা ভারতীয় সমাজের গভীর অসুখের পরিচয় দেয়।
তবে ধর্ষকরা এখানেই ক্ষান্ত হয়নি। সঞ্জিরামের ভাগ্নে উত্তরপ্রদেশে থাকা তার এক বন্ধুকে ফোন করে ডেকে আনে আসিফাকে ধর্ষণের জন্য, যা এই ঘটনার জঘন্যতার মাত্রাকে আরও বাড়িয়ে তোলে।
এত নির্মমতার পরেও, ভারতের মিডিয়া ও সমাজের একটি অংশ এই ঘটনার প্রকৃত ভয়াবহতা তুলে ধরতে ব্যর্থ হয়েছে। আসিফার মতো অসহায় শিশুদের জন্য সমাজের এই নিরবতা এক নিকৃষ্টতম ব্যর্থতা। যেটা প্রমাণ করে, শুধু আইন নয়, সমাজের চেতনা ও নৈতিকতারও পুনর্জাগরণ প্রয়োজন।
যখন আসিফার ঘটনা ধামাচাপা পড়ে যাচ্ছিল, তখন একটি প্রটেস্টের মঞ্চে একজন তরুণী একটি ব্যানার হাতে দাঁড়িয়ে ছিল— "Am I Next?" এটি সেই বাস্তবতা যা আমাদের সমাজকে প্রশ্নবিদ্ধ করে, আসলে আমরা কোথায় যাচ্ছি?
আসিফা বানোর মতো নির্যাতিতাদের জন্য আমাদের কি কোনও বিচার নেই? এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে না পারলে, এমন ঘটনা আমাদের চারপাশে আরও বাড়তেই থাকবে।
Comments